মানুষ তার মনের ভাব তথা দুঃখ, কষ্ট, বেদনা সকল কিছু তার ভাষার মাধ্যমে প্রকাশ করে। তবে যখন ১৯৫২ সালে কথা উঠেছিল মুখের এই ভাষাকে কেড়ে নেওয়ার তখন বাঙালি জাতি আর চুপ থাকতে পারেনি। নিজের মায়ের মুখের ভাষাকে রক্ষা করার জন্য জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকলে মিলে রাজপথে নেমে শুরু করে কঠোর আন্দোলন। পরবর্তীকালে যে আন্দোলন সৃষ্টি করে এক নতুন ইতিহাসের।
তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের ষড়যন্ত্র থেকে আন্দোলন করার মাধ্যমে মাতৃভাষা বাংলাকে ছিনিয়ে নেয় বাংলার দামাল ছেলেরা। মাতৃভাষাকে রক্ষা করতে বাঙ্গালী জাতিকে বহু ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে। বাঙালি জাতির এই ত্যাগ কে ১৯৯৯ সালের ১৭ই নভেম্বর ইউনেস্কো আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার মাধ্যমে তার প্রকৃত মর্যাদা এনে দেয়। নিচে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস রচনা ২০ পয়েন্ট দেওয়া হল।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস রচনা ২০ পয়েন্ট
মাতৃভাষা দিবস বাঙালি জাতির সংস্কৃতির চেতনাকে জাগ্রত করে। বাঙালি জাতি নিজেদের মুখের ভাষা রক্ষা করতে কতটা ত্যাগ স্বীকার করতে পারে। তা ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি ভাষার জন্য আন্দোলন করে ইতিহাসের পাতায় লিপিবদ্ধ করে সমগ্র বিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছে।
ভূমিকা:
১. আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশ্বব্যাপী ২১শে ফেব্রুয়ারি পালিত একটি গুরুত্বপূর্ণ দিবস।
২. এই দিবসটি ভাষার প্রতি শ্রদ্ধা ও মাতৃভাষা রক্ষার জন্য প্রতিষ্ঠিত।
৩. ১৯৫২ সালের এই দিনে বাংলা ভাষার জন্য প্রাণ দিয়েছিলেন শহীদরা।
ইতিহাস:
৪. ১৯৪৮ সালে পাকিস্তান সরকার উর্দুকে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা হিসেবে ঘোষণা করে।
৫. বাংলা ভাষার অধিকার রক্ষায় বাঙালিরা প্রতিবাদ শুরু করে।
৬. ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে গুলি চালিয়ে পুলিশ বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীদের উপর নির্যাতন চালায়।
৭. এই ঘটনায় সালাম, রফিক, বরকত, জব্বার ও শফিউর রহমান শহীদ হন।
মাতৃভাষার গুরুত্ব:
৮. মাতৃভাষা আমাদের চিন্তা-ভাবনার মাধ্যম।
৯. এটি আমাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের বাহক।
১০. মাতৃভাষার মাধ্যমেই আমরা জ্ঞান অর্জন করতে পারি সহজে।
১১. মাতৃভাষার প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করা প্রত্যেকের কর্তব্য।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের তাৎপর্য:
১২. এই দিবসটি আমাদের মাতৃভাষার প্রতি ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা বৃদ্ধি করে।
১৩. এটি বিশ্বব্যাপী ভাষাগত বৈচিত্র্যের গুরুত্ব তুলে ধরে।
১৪. সকল ভাষার সমান অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য অনুপ্রাণিত করে।
বাংলা ভাষার বর্তমান অবস্থা:
১৫. বাংলা ভাষা আজ বিশ্বের অন্যতম প্রধান ভাষা।
১৬. ইউনেস্কো কর্তৃক বাংলা ভাষাকে বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।
১৭. তবুও, বাংলা ভাষার উন্নয়নে এখনও অনেক কিছু করার বাকি।
উপসংহার:
১৮. আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনের মাধ্যমে আমরা আমাদের মাতৃভাষার প্রতি ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা প্রদর্শন করতে পারি।
১৯. সকল ভাষার সমান অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
২০. মাতৃভাষাকে সমৃদ্ধ করে আমরা আমাদের জাতিকে সমৃদ্ধ করতে পারি।
শেষ কথা
আজকের এই পোস্টে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস রচনা ২০ পয়েন্ট এর একটি সুন্দর নমুনা আপনাদের সামনে উপস্থাপন করা হয়েছে। পৃথিবীর ইতিহাসে বাংলাদেশের রাষ্ট্রভাষা বাংলা এক বিশেষ মর্যাদা স্থান তৈরি করে নিয়েছে। বাঙালি জাতি নিজের ভাষাকে ভালোবাসা ও শ্রদ্ধার মাধ্যমে পৃথিবীর বুকে এই স্থান তৈরি করে দিয়েছে।
আরও দেখুনঃ
শহীদ দিবস সম্পর্কে ১০ টি বাক্য
২১ শে ফেব্রুয়ারি ছন্দ , উক্তি , ছোট কবিতা
২১ শে ফেব্রুয়ারি নিয়ে ছোট কবিতা