২০২০ সালে মহামারী করোনা ভাইরাসজনিত কারণে বিপর্যস্ত হয়ে ভারতের সকল প্রকার ভ্রমণ ভিসা বাতিল করে দেওয়া হয়। তবে ইতিমধ্যে দীর্ঘ দুই বছর পর নতুন করে ভারতীয় ভিসা আবেদন শুরু হয়েছে। পূর্বে ভারতীয় ভিসা খুলনা ভিসা অফিস থেকে তৈরি করা হতো। তবে খুলনা ভিসা অফিসে পর্যাপ্ত সুবিধা না থাকায় দূরদূরান্ত থেকে টাকা পয়সা খরচ করে খুলনায় গিয়ে অনেকে হতাশ হয়ে ফিরে আসতেন।
তবে যশোর ভিসা অফিস স্থাপন করে ভারতীয় ভিসা আবেদন গ্রহণ শুরু হওয়ায় নড়াইল, ঝিনাইদহ, মাগুরা, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, সাতক্ষীরা ও কুষ্টিয়া জেলার ব্যবসায়ী ও মানুষদের চিকিৎসা সেবার ক্ষেত্রে খুব সুবিধা হবে। ভারতীয় ভিসা আবেদন কেন্দ্রের নতুন শাখা যশোরে স্থাপিত হওয়ায় যাতায়াত খরচ ও সময় দুই-ই সাশ্রয় হবে।
যশোর ভিসা অফিস
পূর্বে ভারতীয় ভিসা তৈরির আবেদনের কাগজ পত্র খুলনা ভিসা অফিসে জমা দিতে হতো। যার ফলশ্রুতিতে খুলনা ভিসা অফিসে প্রতিদিন এত মানুষের ভিড় থাকে যে বেশিরভাগ দিনে আবেদনপত্র জমা দেওয়া যেত না। তবে বর্তমানে যশোর ভিসা অফিস স্থাপন করায় অতি সহজে ভিসা তৈরির কাগজপত্র জমা দিয়ে ভিসা তৈরি করা যাচ্ছে।
বেনাপোল কিয়ারিং অ্যান্ড ফরোয়ার্ডিং (সিঅ্যান্ডএফ) এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান প্রথম আলো সংবাদ মাধ্যম কে বলেন, আমদানি নির্ভর মোটরগাড়ির যন্ত্রাংশের মোট ব্যবসার ৭০ শতাংশ হয় যশোরে। তবে যশোরে ভিসা অফিস না থাকায় অসংখ্য মানুষের ব্যবসা বাণিজ্য ও উন্নত চিকিৎসা ব্যাহত হতো যা বর্তমানে অনেক সহজতর হয়েছে।
যশোর ভিসা অফিস থেকে কি কি ভিসা তৈরি করা যাবে
যশোর ভিসা অফিস থেকে বিভিন্ন ধরনের ভিসা তৈরি করা যায়। ভারতে অসংখ্য পর্যটন কেন্দ্র রয়েছে। এ সকল পর্যটন কেন্দ্রের ভ্রমণ করার জন্য প্রতিনিয়ত বাংলাদেশ থেকে অসংখ্য মানুষ ভারতে অবস্থান করছে। এছাড়াও ভারতে অনেক উন্নত বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে।
এ সকল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চ ডিগ্রি অর্জনের জন্য অনেকে ভারতীয় ভিসা তৈরীর আগ্রহ প্রকাশ করে। যার পরিপ্রেক্ষিতে অধিকাংশ ক্ষেত্রে যশোর অফিস থেকে ভারতীয় টুরিস্ট ও স্টুডেন্ট ভিসার জন্য সব থেকে বেশি আবেদন করা হয়। এছাড়াও বিভিন্ন ক্যাটাগরির ভিসা যশোর ভিসা অফিস থেকে তৈরি করা হয়।
যশোর অফিস থেকে ভিসা তৈরীর খরচ ২০২৪
করোনা ভাইরাস জনিত কারণে দীর্ঘ দুই বছর যশোর অফিসের ভিসা তৈরির কার্যক্রম বন্ধ ছিল। অতঃপর ২০২২ সালে ভিসা তৈরির কার্যক্রম শুরু হলে যশোর ভিসা অফিসের সামনে অসংখ্য মানুষের সমাগম শুরু হয়। সামান্য কিছু টাকা আবেদন ফ্রি প্রদান করার মাধ্যমে যশোর অফিস থেকে ভারতীয় ভিসার জন্য আবেদন করা যায়।
ভিসা তৈরীর আবেদন ফি ভিসার ধরনের উপর নির্ভর করে ন্যূনতম প্রায় ১০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে সতেরো হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। অপর দিকে ভিসা তৈরির খরচ সম্পূর্ণ ভিসার ক্যাটাগরির উপর নির্ভর করে। যেমন টুরিস্ট ভিসা তৈরি করতে ন্যূনতম প্রায় ২ লাখ টাকা থেকে ৩ লাখ টাকা খরচ হয়। অপরদিকে স্টুডেন্ট ভিসা তৈরি করতে প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজারটাকা থেকে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়।
যশোর ভিসা অফিস থেকে কোন কোন দেশের ভিসা পাওয়া যাবে
বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ভিসা তৈরি হয়ে থাকে। এ সকল ভিসা তৈরি করার জন্য বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় ভিসা অফিস স্থাপন করা হয়েছে। তবে ভারতীয় ভিসা তৈরি করার জন্য যশোর জেলায় নতুন করে ভিসা অফিস স্থাপন করা হয়েছে।
স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া খুলনা শাখার প্রধান মানিক চক্রবর্তী প্রথম আলো সংবাদ মাধ্যম কে বলেন, ‘১৫ ডিসেম্বর ভারতীয় ভিসা আবেদন গ্রহণ কেন্দ্রের নতুন শাখা যশোর শহরে খোলার পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। যশোর জেলায় এই ভিসা অফিস স্থাপিত হওয়ার কারণে বাংলাদেশ ও ভারত দুই দেশের বাণিজ্যিক লেনদেনের গতি আরো দ্বিগুণ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
শেষ কথা
যশোর ভিসা অফিস ভারতীয় ভিসা আবেদন কেন্দ্রের দ্বিতীয় শাখা। প্রতিনিয়ত অসংখ্য মানুষ ভারতীয় ভিসার জন্য যশোর অফিসে যাতায়াত করে থাকে। ভিসা তৈরির ক্ষেত্রে অনেকের দালালের খপ্পরে পড়ে ক্ষতির সম্মুখীন হয়। তাই সকলকে অধিক সতর্কতার সাথে ভিসা তৈরির কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে।