পশ্চিম ইউরোপ মহাদেশের একটি উন্নত রাষ্ট্র অস্ট্রিয়া। দেশটি ১৯৯৫ সাল থেকে ইউরোপ ইউনিয়নের সদস্যের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। অস্ট্রিয়া দেশটি মূলত আল্পস পর্বতমালার উপরে অবস্থিত। তাই দেশটির প্রায় বেশিরভাগ অঞ্চলে পর্বতময়।
বর্তমানে বাংলাদেশে বেকারত্বের হার দিন দিন বেড়েই চলেছে। বেকারত্বের বোঝা মাথা থেকে নামাতে ও ভালো কর্মসংস্থানের আশায় অসংখ্য মানুষ অস্ট্রিয়ার দিকে অগ্রসর হচ্ছে। তাদের সকলের চোখেই রয়েছে আর্থিক ভাবে স্বাবলম্বী ও পরিবারকে সচ্ছলতা ফিরিয়ে দেওয়ার স্বপ্ন।
বর্তমানে যারা অস্ট্রিয়া অবস্থান করছে তাদের বেশিরভাগই জীবিকার তাগিদে অস্ট্রিয়া প্রবাসী হয়েছে। অনেকেই আবার নতুন করে অস্ট্রিয়া ভিসার জন্য আবেদন করেছে। এই সকল ভিসা তৈরি ও বাংলাদেশ টু অস্ট্রিয়া বিমান ভাড়া একত্রে লাখ লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ হয়।
অস্ট্রিয়া যেতে কত টাকা লাগে
ইউরোপ মহাদেশের বড় বড় রাষ্ট্রে অধিক টাকা ইনকাম করা যায়। তাই বর্তমানে অধিকাংশ মানুষ ইউরোপ মহাদেশের বড় রাষ্ট্রে যাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে। তবে বাংলাদেশ থেকে সরাসরি ইউরোপ মহাদেশের বড় কোন রাষ্ট্রে যাওয়া সহজ কাজ নয়।
যার পরিপ্রেক্ষিতে বেশিরভাগ মানুষ ইউরোপের বড় বড় রাষ্ট্রে যাওয়ার জন্য ইউরোপ মহাদেশের ছোট রাষ্ট্র অস্ট্রিয়া গিয়ে থাকে। পরবর্তীতে অস্ট্রিয়া থেকে খুব সহজেই অল্প টাকা খরচ করে এরকম মহাদেশের অন্য যেকোনো বড় বড় রাষ্ট্রে পৌঁছানো যায়।
অস্ট্রিয়া পৌঁছাতে ভিসা তৈরীর ব্যয় ও বিমান ভাড়া একত্রে আনুমানিক সর্বনিম্ন ৬ লাখ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ প্রায় ৮ লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ করতে হতে পারে। তবে সরকারিভাবে ভিসা পেলে অস্ট্রিয়া যেতে আনুমানিক সর্বনিম্ন সাড়ে ৫ লাখ টাকা থেকে ৭ লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ হয়ে থাকে।
অস্ট্রিয়া ভিসা খরচ ২০২৪
বর্তমানে অস্ট্রিয়ায় যাওয়ার চাহিদা তুলনামূলক কমহওয়ায় অস্ট্রিয়া ভিসা তৈরীর খরচ ও তুলনামূলক কম। অস্ট্রিয়ার ভিসা তৈরি করতে বর্তমানে আনুমানিক সর্বনিম্ন ৪ লাখ টাকা থেকে ৬ লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ করতে হচ্ছে। তবে অনেক সময় সরকারিভাবে অল্প টাকায় বাংলাদেশ থেকে অস্ট্রিয়া যাওয়ার সুযোগ তৈরি হয়।
যখন আনুমানিক ৫ লাখ টাকা খরচ করলেই অস্ট্রিয়া বিভিন্ন কাজের ভিসা তৈরি করা যায়। তবে সরকারিভাবে অনেকেই ভিসা তৈরি করতে চাওয়ায় সরকারি ভিসার চাহিদা তুলনামূলক বেশি হওয়ায় ৫ লাখ টাকার উপরে খরচ হতে পারে।
অস্ট্রিয়া কোন কাজের চাহিদা বেশি
বর্তমানে অস্ট্রিয়া তে বিভিন্ন কাজের সুযোগ রয়েছে। তবে অস্ট্রিয়া তে কাজ করতে হলে অবশ্যই বয়স বেশি থাকতে হবে। কেননা অস্ট্রিয়া শ্রম আইন অনুযায়ী শিশু শ্রম সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।। অস্ট্রিয়া তে যে সকল কাজের চাহিদা বেশি সে সকল কাজের পারিশ্রমিক ও বেশি হয়ে থাকে।
- কনস্ট্রাকশন ও ইলেকট্রিশিয়ান।
- হোটেল ম্যানেজার ও ফ্যাক্টরি ওয়ার্কার।
- ড্রাইভিং ও ক্লিনার।
- হোটেল সেফ ও রেস্টুরেন্ট ওয়েটার। ইত্যাদি।
অস্ট্রিয়া কাজের বেতন কত
ইউরোপ মহাদেশের ছোট রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে অস্ট্রিয়া একটি। অস্ট্রিয়া ছোট রাষ্ট্র হওয়ায় অস্ট্রিয়াতে কাজের পরিমাণ তুলনামূলক কম। যার পরিপ্রেক্ষিতে অস্ট্রিয়া কাজ করে অধিক টাকা ইনকাম করা যায় না। তবে অস্ট্রিয়া থেকে ইউরোপের অন্য রাষ্ট্রে গিয়ে অল্প কাজ করে অধিক টাকা ইনকাম করা সম্ভব।
বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো অস্ট্রিয়াতেও কাজের ধরনের অনুযায়ী বেতন নির্ধারণ করা হয়। যেমন অস্ট্রিয়াতে বিভিন্ন কোম্পানিতে চাকরি করলে আনুমানিক ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত ইনকাম করা যায়। অপরদিকে কনস্ট্রাকশন সাইটে কাজ করলে মাস শেষে আনুমানিক ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করা সম্ভব।
অস্ট্রিয়া ভিসা আবেদন করতে কি কি কাগজপত্র লাগে
বর্তমানে অস্ট্রিয়া ভিসা পাওয়া তুলনামূলক কঠিন। কেননা বর্তমানে অস্ট্রিয়া যেতে বেশ কিছু শর্ত পূরণ করতে হয়। এ সকল শর্তের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল জাতীয় পরিচয় পত্র অথবা জন্ম নিবন্ধন সনদ অনুযায়ী ১৮ বছর বয়স সম্পন্ন হতে হবে এবং একটি বৈধ অস্ট্রিয়া ভিসা থাকতে হবে। এই বৈধ ভিসা তৈরি করতে আবার বেশ কিছু কাগজপত্রের প্রয়োজন যার নিচে দেওয়া হয়েছে।
- বৈধ ৬ মাস মেয়াদি পাসপোর্ট ও গত ৬ মাসে তোলা একটি রঙিন ছবি।
- বাংলাদেশী নাগরিকত্ব সনদ বা জাতীয় পরিচয় পত্র ফটোকপি।
- স্বাস্থ্য বীমার প্রমাণ ও বায়োমেট্রিক ডেটা জমা দেওয়া।
- কোন কাজে দক্ষতার সার্টিফিকেট অর্থাৎ প্রশংসাপত্র জমা দিতে হবে।
- ভাষা দক্ষতার সার্টিফিকেট জমা দিতে হবে
- ড্রাইভিং ভিসায় গেলে ড্রাইভিং লাইসেন্স জমা দিতে হবে।
অস্ট্রিয়া যাওয়ার উপায় ২০২৪
বৈধভাবে অস্ট্রিয়া যাওয়ার একমাত্র উপায় হল অস্ট্রিয়া সরকারের অনুমতিপত্র তথা ভিসার মাধ্যমে যাওয়া। ভিসা ছাড়া বৈধভাবে অস্ট্রিয়া প্রবেশ করা কোনো ভাবেই সম্ভব নয়। অনেক অসাধু দালাল বা এজেন্সি সব থেকে সহজ উপায়ে অস্ট্রিয়া পৌঁছে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে থাকে। বলে রাখা ভালো ভিসা ছাড়া কোন উপায় এই অস্ট্রিয়া প্রবেশ সম্ভব নয়।
শেষ কথা
বর্তমানে অসংখ্য দালাল বা এজেন্সি অবৈধভাবে অস্ট্রিয়া যাওয়ার পরামর্শ দেয়। মূলত এরা নিজেরাই অবৈধ ভাবে অস্ট্রিয়া পৌঁছে দেওয়ার নাম করে টাকা নিয়ে মানুষকে বিপদের মুখে ফেলে দেয়। তাই অস্ট্রিয়া যাওয়ার আগে এই সকল দালাল থেকে সতর্ক থাকতে হবে।