লিবিয়া যেতে কত টাকা লাগে

বিশ্বের বড় বড় রাষ্ট্র গুলোর মধ্যে লিবিয়া একটি। লিবিয়া আফ্রিকার ভূমধ্যসাগরের দক্ষিণ তীরে অবস্থিত। লিবিয়া অর্থনৈতিক ভাবে সচ্ছল একটি দেশ হওয়ায় প্রতিবছর অসংখ্য শ্রমিক নিয়োগ সার্কুলার প্রকাশ করা হয়। এই সকল কাজের সার্কুলার অনুযায়ী অনেকেই ভিসার জন্য আবেদন করে থাকে।

তবে লিবিয়া ভিসার জন্য সব থেকে বেশি বেসরকারি ভাবে আবেদন করা হয়। বর্তমানে বেসরকারি ভাবে লিভিয়া ভিসা পাওয়া তুলনামূলক কঠিন। কেননা লিবিয়া সরকার বেসরকারি ভাবে অনেক কম সংখ্যক লোক নিয়োগ দেওয়ার অনুমতি প্রদান করে।

তবে লিবিয়ায় বসবাসরত পরিচিত কোন ব্যক্তি থাকলে তার সাহায্যে খুব সহজেই ভিসা তৈরি করা সম্ভব। কেননা লিবিয়া থেকে ভিসা কনফার্ম করে দিলে সহজে ভিসা তৈরি হয়ে যায়। বর্তমানে অনেকেই পরিচিত লোক না থাকায় বার বার ভিসা তৈরীর আবেদন করে ব্যর্থ হচ্ছে।

লিবিয়া যেতে কত টাকা লাগে

অন্যান্য দেশের ভিসা পাওয়া সহজ হলেও লিবিয়া ভিসা পাওয়া ততটাই কঠিন। অবৈধ ভাবে লিবিয়া প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করার পর থেকে লিবিয়া প্রবেশ করা কঠিন হয়ে গেছে। তবে লিবিয়ার ভিসা তৈরী করার মাধ্যমে বৈধ ভাবে লিবিয়া প্রবেশ করা যায়।

কিছু বছর পূর্বে অবৈধ ভাবে অল্প খরচে লিবিয়া পৌঁছানো গেলেও বর্তমানে বৈধ ভাবে লিবিয়া যেতে লাখ লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ করতে হয়। লিবিয়া যাতে যে পরিমাণ টাকা খরচ হয় তার অধিকাংশ ভিসা তৈরিতে ব্যয় করতে হয়। ভিসা তৈরি করতে সর্বনিম্ন ২ লাখ টাকা থেকে সর্বোচ্চ প্রায় ৬ লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ হয়।

ভিসা তৈরির ব্যয় ছাড়াও লিবিয়া বৈধ ভাবে প্রবেশ করতে হলে বিমান ভাড়া সহ আনুষাঙ্গিক কিছু খরচ রয়েছে। ভিসা সহ এই সকল খরচ একত্র করলে দেখা যায় লিবিয়া যেতে প্রায় ৫ লাখ টাকা থেকে ৭ লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ হয়। তবে লো কোয়ালিটির বিমান দ্বারা ফ্লাই করলে এই খরচ ৫০ হাজার টাকা থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত কমে যেতে পারে।

লিবিয়ার ভিসা খরচ ২০২৫

বর্তমানে অসংখ্য ভিসায় লিবিয়া বৈধ ভাবে যাওয়া যায়। এক একটি ভিসা তৈরি করতে কয়েক লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ হয়ে থাকে। যেমন লিবিয়া ওয়ার্ক পারমিট ক্যাটাগরির ভিসা তৈরি করতে আনুমানিক ৫ লাখ টাকা থেকে ৬ লাখ টাকা খরচ হয়। আবার একই দেশ অর্থাৎ লিবিয়া স্টুডেন্ট বা টুরিস্ট ভিসায় যেতে আনুমানিক ২ লাখ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৪ লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ হয়।

লিবিয়া কাজের বেতন কত

বিশ্বের সকল দেশেই কাজের ধরনের উপর বেতন নির্ভর করে। যেমন লিবিয়াতে কোন বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করলে আনুমানিক ৩০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত বেতন পাওয়া যায়। আবার সরকারি চাকরিতে এই বেতন গিয়ে দাঁড়ায় ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকার উপরে।

তবে লিরিয়াতে শ্রমিক কিংবা লেবার ভিসায় গেলে চাকরির তুলনায় অধিক টাকা ইনকাম করা যায়। লিবিয়াতে একজন শ্রমিকের সর্বনিম্ন বেতন আনুমানিক ৪০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত। তবে শ্রমিক ভিসায় লিবিয়া গেলে ওভারটাইম করে বেতন সহ আনুমানিক প্রায় ৭০ হাজার টাকা পর্যন্ত ইনকাম করা সম্ভব।

লিবিয়া যেতে কত বছর বয়স লাগে

পূর্বে সকল বয়সের মানুষ লিবিয়া যেতে পারলেও বর্তমানে লিবিয়া সরকার সকল শ্রমিকের জন্য বয়সসীমা নির্ধারণ করে দিয়েছে। বর্তমানে কাজের উদ্দেশ্যে লিবিয়া যেতে হলে জাতীয় পরিচয় পত্র অথবা জন্ম নিবন্ধন সনদ অনুযায়ী সর্বনিম্ন ১৮ বছর বয়স হতে হবে। ১৮ বছরের কম বয়সী কোন মানুষ লিরিয়াতে কাজের উদ্দেশ্যে যেতে পারবে না।

ঢাকা থেকে লিবিয়া যেতে কত টাকা লাগে

ঢাকা বাংলাদেশের রাজধানী হওয়ায় বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ঢাকাতেই অবস্থিত। যার পরিপ্রেক্ষিতে লিবিয়া যেতে হলে ঢাকা থেকে বিমানে উঠতে হবে। ঢাকা থেকে লিবিয়া যেতে ভিসা ও বিমান ভাড়া সহ আনুমানিক সর্বনিম্ন ৬ লাখ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ প্রায় ৭ লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে।

লিবিয়া যেতে কি কি কাগজপত্র লাগে

বর্তমানে লিবিয়া ভিসা তৈরি করতে লিবিয়া দূতাবাসের অনুমোদিত বেশ কিছু কাগজপত্রের প্রয়োজন পড়ে। এই সকল কাগজপত্র ব্যতীত লিবিয়া ভিসার জন্য আবেদন করা যাবে না। লিবিয়া ভিসার জন্য আবেদন করতে হলে নিম্নে দেওয়া কাগজপত্র সহ আরো বেশ কিছু কাগজপত্র লাগতে পারে।

  • বাংলাদেশী বৈধ পাসপোর্ট থাকতে হবে, যার মেয়াদ কমপক্ষে ৬ মাস হতে হবে।
  • জাতীয় পরিচয়পত্র ও জন্ম নিবন্ধন সনদ (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)।
  • করোনা ভাইরাসের টিকা কার্ড ও পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট।
  • সদ্য তোলা রঙিন ছবি ও ব্যাংক স্টেটমেন্ট (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)।
  • এছাড়া ড্রাইভিং ভিসায় যেতে চাইলে ড্রাইভিং লাইসেন্স জমা দিতে হবে।

শেষ কথা

১৯৫০ দশকের আগে লিবিয়া একটি দরিদ্র রাষ্ট্র থাকলেও বর্তমানে লিবিয়া অর্থনৈতিক ভাবে অনেক উন্নত শীল রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। অনেক অসাধু দালাল লিবিয়া ভিসা তৈরি করে দেওয়ার নামে লোক ঠেকানোর ব্যবসায় লিপ্ত রয়েছে। তাই লিবিয়া ভিসা তৈরি করার আগে অধিক সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

Scroll to Top