প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শাবান মাস কে রমজান মাসের প্রস্তুতি নেওয়ার মাস বলেছেন। তিনি (সাঃ) রমজান মাস ব্যতীত অন্য কোন মাসে এত রোজা রাখেননি যত রোজা শাবান মাসে রাখতেন। তিনি আরো বলেছেন মধ্য শাবানের রাতে মহান আল্লাহ পাক তাঁর প্রিয় বান্দাদেরকে ক্ষমা করে থাকেন।
তাই সমগ্র মুসলিম জাতি মধ্য সাবানের রাতে মহান আল্লাহ তায়ালাকে খুশি করতে প্রতিদিনের তুলনায় অধিক পরিমাণে নামাজ আদায় করে থাকে। আমাদের মধ্যে বেশিরভাগ মানুষই আরবি নিয়ত করে থাকে তবে আপনি চাইলে বাংলাতে ও শবে বরাতের নামাজের নিয়ত করতে পারেন।
শবে বরাতের নামাজের নিয়ত
হিজরী শাবান মাসের ১৪ ও ১৫ তারিখ দিবাগত রাতকে শবে বরাতের রাত বলা হয়। একটি হাদিসে পাওয়া যায় প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মধ্য শাবানের রাতে মহান আল্লাহ পাক তার বান্দাদের দিকে বিশেষ নজর দেন এবং আল্লাহর সাথে শিরিক কারী ও হিংসুক ব্যতীত সকলকে ক্ষমা করে দেন।
মহান আল্লাহ তায়ালার নৈকট্য ও ক্ষমা লাভের আশায় মুসলিমরা শবে বরাতের রাত আল্লাহর ইবাদত বন্দেগী করার মাধ্যমে পার করে থাকেন। শবে বরাত নিয়ে আলাদা কোন নামাজ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ও সাহাবায়ে কেরাম কেউ আদায় করেনি। তবে আপনি চাইলে সাধারণ নফল নামাজ আদায় করতে পারেন।
শবে বরাতের নামাজ পড়ার নিয়ম
প্রতিবছর একদিন শবে বরাত পালন হওয়ায় অনেকেই ভুলে যায় কিভাবে শবে বরাতের নামাজ পড়তে হয়। শবে বরাতের রাতে এশার ফরজ নামাজ আদায় করার পর আপনি চাইলে দুই রাকাত, দুই রাকাত করে যত ইচ্ছা নফল নামাজ আদায় করতে পারেন।
শবে বরাতের নফল নামাজ আদায়ের ক্ষেত্রে অজু করে নামাজে দাঁড়াতে হবে। এরপর নিয়ত করে সূরা ফাতিহার সাথে অন্য যে কোন সূরা মিলিয়ে পড়ে রুকু সেজদার মাধ্যমে প্রথম রাকাত শেষ করতে হবে। অতঃপর পূর্বের ন্যায় দ্বিতীয় রাকাত সম্পূর্ণ করে শেষ বৈঠকে তাশাহুদ, দরুদ ও দোয়া মাসুরা পাঠ করে সালাম ফেরানোর মাধ্যমে নামাজ শেষ করতে হবে।
শবে বরাতের নামাজের আরবি নিয়ত
নামাজ আদায়ের ক্ষেত্রে অজু করার পর সর্বপ্রথম শবে বরাতের নামাজের নিয়ত করার মাধ্যমে নামাজ শুরু করতে হবে। আপনার অন্তরে নামাজ পড়ার নিয়ত থাকলে মুখে নামাজের নিয়ত না উচ্চারণ করলেও নামাজ হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ। তবে যারা আরবি নিয়ত মুখে উচ্চারণ করতে চান তাদের জন্য আরবি নিয়ত নিচে দেওয়া হল।
নাওয়াইতুআন্ উছল্লিয়া লিল্লা-হি তাআ-লা- রাকআতাই ছালা-তি লাইলাতিল বারা-তিন্ -নাফলি, মুতাওয়াজ্জিহান ইলা-জিহাতিল্ কাবাতিশ্ শারীফাতি আল্লা-হু আকবার।
শবে বরাত নামাজের বাংলা নিয়ত
আমাদের মধ্যে অনেকেই ভাবে নামাজ পড়ার ক্ষেত্রে নামাজের নিয়ত আরবিতে করতে হবে যা সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। আপনি নামাজের নিয়ত বাংলাতেও করতে পারেন এমনকি ওলামায়ে কেরাম গনের মতে আপনি নামাজে কোন নিয়ত মুখে না বললেও নামাজ হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।
তবে আপনি যদি একান্তই নিয়ত করতে চান তাহলে বাংলায় এভাবে করতে পারেন। “আমি কিবলামুখী হয়ে আল্লাহর উদ্দেশ্যে শবে বরাতের দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করার নিয়ত করতেছি আল্লাহু আকবার”।
শবে বরাতের নফল নামাজ এর নিয়ত
শবে কদর অর্থাৎ লাইলাতুল কদরের নামাজের মত শবে বরাতের কোন নির্দিষ্ট ফজিলত পূর্ণ নামাজ নেই। তবে অনেকেই এই বিশেষ দিনে নফল ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহকে সন্তুষ্ট করতে চায়। নিচে নফল নামাজের নিয়ত দেওয়া হল।
নাওয়াইতুয়ান উসাল্লিয়া-লিল্লাহি তা’আলা রাকাআতি ছালাতিল নফলি মোতাওয়াজ্জিয়ান ইলা জিহাতিল কা বাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।
এছাড়াও আপনি চাইলে এভাবে বাংলাতেও নফল নামাজের নিয়ত করতে পারেন। আমি কিবলামুখী হয়ে আল্লাহর উদ্দেশ্যে দুই রাকাত নফল নামাজ আদায়ের নিয়ত করতেছি আল্লাহু আকবার।
শেষ কথা
বাংলা এবং আরবি দুই রকম ভাবেই শবে বরাতের নামাজের নিয়ত করা যায় তবে আরবিতে নিয়ত করা উত্তম। তবে মনে রাখতে হবে শবে বরাত উদ্দেশ্যে নামাজ পড়া যাবে না আল্লাহকে খুশি করতে নফল নামাজের নিয়ত করে নামাজ আদায় করতে হবে।
আরও দেখুনঃ