১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারির দিনটিতে যারা ভাষার জন্য শহীদ হয়েছিলেন তাদের শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করতে ১৯৫৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রথমবারের মতো পালন করা হয় শহীদ দিবস। রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই দাবির প্রেক্ষিতে গড়ে উঠে চলে এক মিছিল। সেই মিছিলে ভাষার জন্য শহীদ হয়েছেন আবুল বরকত, আবদুল জব্বার, আবদুস সালামসহ, আরো নাম না জানা বাঙালি ছাত্র।
তাদের এই আত্মত্যাগে প্রতিবছর বাংলাদেশসহ পুরো বিশ্বে শহীদ দিবস পালন করা হয়। এই শহীদ দিবস কে কেন্দ্র করে শহীদদের স্মরণে তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় দোয়া প্রার্থনার ব্যবস্থা করা হয়। বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। তবে এই মহান দিনের কথা আমরা অনেকেই ভুলে গিয়ে থাকি। তাই এই পোস্ট থেকে আপনারা চাইলে শহীদ দিবস কবে পালিত হবে তা জেনে নিতে পারেন।
শহীদ দিবস কবে
এই শহীদ দিবস পুরো বাংলাদেশ সহ বিশ্বের অন্যান্য দেশের মানুষ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালন করে থাকে। শহীদ দিবসকে ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ১৯৯৯ সালের ১৭ ই নভেম্বর জাতিসংঘ কর্তৃক গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রতিবছর ২১শে ফেব্রুয়ারি বিশ্বব্যাপী পালন করা হয়।
এবং বাংলাদেশ সরকার শহীদ দিবস প্রতিবছর ২১ ফেব্রুয়ারি যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপনের লক্ষ্যে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করে থাকে। এই শহীদ দিবসকে খুবই শ্রদ্ধার সাথে পালনের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশের সরকার এবং বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সহ সকল জায়গায় সঠিক নিয়মে ও মাপে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়।
শহীদ দিবস ২০২৪
১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি ঘটনা পর্যালোচনা করলে জানা যায়। সময়টি ছিল বিভীষিকাময় একটি দিন। ভাষার জন্য শহীদ হয়েছিলেন, ভাষার জন্য রক্ত ঝরিয়েছিলেন। যাদের অবদানে আজ আমরা বাংলা ভাষায় স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারছি। মনের কথাগুলোকে মনের আনন্দে প্রকাশ করতে পারছি। দিনটি ছিল একুশে ফেব্রুয়ারি।
রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাহি দাবিতে এক গণ আন্দোলন বাঙালি ছাত্র সমাজ গড়ে তুলেছিল। ১৯৪৭ সালের দেশ বিভাগের পর পাকিস্তানের গভর্নর মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ পূর্ব বাঙালিদের উপর নানাভাবে নিপীড়ন শুরু করে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য নেক্কারজনক কাজ ছিল বাংলা ভাষার পরিবর্তে জোরপূর্বক উর্দু ভাষাকে স্বীকৃতি দিতে।
কিন্তু বাঙালি ছাত্র সমাজ তা মেনে নেয়নি। তাদের বিরুদ্ধে এক গণআন্দোলন গড়ে তুলেছিল। এই মিছিল আন্দোলনটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে এসে উপস্থিত হলে অত্যাচারিত শাসকবর্গের পুলিশেরা মিছিলের উপর গুলি ধর্ষণ করে। এতে করে পরিচিত নাম জানা ছাত্র রফিক, আব্দুস সালাম সহ আরো অজানা ব্যক্তি নিহত হন।
এর প্রেক্ষিতেই ভাষার জন্য আত্মত্যাগ কারি ব্যক্তিদের স্মরণে ১৯৫৩ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি প্রথম শহীদ দিবস পালন করা হয়। এ বছর ২০২৪ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস পালন করা হবে। সাথে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবেও পুরো বাংলাদেশ একযোগে এই দিবসটি পালন করা হয়।
বাংলাদেশের শহীদ দিবস কবে
কোনো শহীদদের উদ্দেশ্যে পালিত দিবস কে শহীদ দিবস বলা হয়। বাংলাদেশের ইতিহাসে ভাষা যেন আত্মত্যাগকারী এবং ভাষার জন্য শহীদ হওয়া ব্যক্তিদের স্মরণে বাংলাদেশ শহীদ দিবস পালন করা হয়। অর্থাৎ ১৯৫২ সালের ২১ শে ফেব্রুয়ারি রফিক, জব্বার, শফিউর, সালাম, বরকত ভাষার জন্য নিহত হয়েছিলেন। তাদের স্মরণে এবং শ্রদ্ধার জ্ঞাপনের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশের শহীদ দিবস পালন করা হয় প্রতিবছর ফেব্রুয়ারি মাসের ২১ তারিখে।
21শে ফেব্রুয়ারি কি দিবস?
বাংলাদেশের ইতিহাসে ২১ শে ফেব্রুয়ারির দিনটিকে শহীদ দিবস এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালন করা হয়। তবে আন্তর্জাতিক দিবস হিসেবে একুশে ফেব্রুয়ারির দিনে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করা হয়। পুরো বাঙালি জাতির জন্য এই দিনটি অনেক বেশি শ্রদ্ধা এবং সম্মানের। বাংলাদেশ সরকার এ দিবস কে কেন্দ্র করে যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপনের লক্ষ্যে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করে থাকে।
শেষ কথা
ভাষার জন্য শহীদ হওয়া ব্যক্তিদের স্মরণে শহীদ দিবস পালিত হবে একুশে ফেব্রুয়ারি। আশা করতেছি ইতিমধ্যে আপনারা আজকের এই আলোচনা থেকে শহীদ দিবস কবে পালিত হবে তা জানতে পেরেছেন। এছাড়া পাশাপাশি জানতে পেরেছেন শহীদ দিবসকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস।