সলিমআরবি বছরের পবিত্র রমজান মাস কে পৃথিবীর সকল মুসলিমদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ও ফজিলত পূর্ণ মাস হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে। কেননা এই পবিত্র রমজান মাসেই মুসলমানদের ধর্মগ্রন্থ পবিত্র আল কুরান নাজিল করা হয়েছিল। যা সকল ঈমানদার মুসলিমদের জন্য পথ প্রদর্শক ও সত্য মিথ্যার ন্যায় নির্ধারক হিসেবে কাজ করে। আমাদের মধ্যে অনেকেই রমজান নিয়ে উক্তি স্ট্যাটাস দিয়ে রমজান মাসকে স্বাগত জানায়।
পবিত্র রমজান মাসের নামকরণ নিয়ে বেশ কিছু অভিমত পাওয়া যায়। এর মধ্যে আবদুল্লাহ ইবনে উমর রাজিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকেও বর্ণিত আছে যে, যেহেতু রমজান মাসের রোজা বান্দার আমলনামা থেকে গুনাহ সমূহ কে জ্বালিয়ে দেয় তাই এই পবিত্র মাসকে রমজান নামকরণ করা হয়ে ছিল।এছাড়া অনেকে মনে করে রোজা ফরজ হওয়ার সময় প্রচন্ড রোদের উত্তাপ থাকার কারণেই এই মাসকে রমজান নামকরণ করা হয়েছিল।
রমজান নিয়ে উক্তি
মুসলিম রমজান মাস শুরু হলে সকল মুসলিমদের ঘরে আনন্দের বন্যা বইতে শুরু করে। কেননা রমজান মাস নিজেকে পাপ মুক্ত ও মহান আল্লাহকে খুশি করার মধ্য দিয়ে শুরু হয় এবং ঈদুল ফিতরের মহা আনন্দের উৎসবের মধ্য দিয়ে তা শেষ হয়। পৃথিবীর অনেক বিখ্যাত কবি, ইসলামিক সাহিত্যিক ও লেখক গণ পবিত্র মাহে রমজান নিয়ে উক্তি বলেছেন যা নিচে দেওয়া হল।
- সূরা আল-বাকারা, আয়াত ১৮৩: “হে ঈমানদারগণ! তোমাদের উপর রোজা ফরয করা হয়েছে, যেমন তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর ফরয করা হয়েছিল, যাতে তোমরা পরহেজগার হও।”
- সূরা আল-ফজর, আয়াত ১-২: “সুবহে সাদিকের কসম এবং রাতের যখন তা শান্ত থাকে।”
- রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন: “রমজান মাস আসে, বরকত ও রহমত নিয়ে।” (তিরমিযী)
- আবদুল কালাম আজাদ (রহঃ) বলেছেন: “রমজান মাস শুধুমাত্র রোজা রাখার মাস নয়, বরং এটি সংযম, ধৈর্য, এবং সহানুভূতির মাস।”
- কাজী নজরুল ইসলাম: “রমজান মাস এলোরে, মনের আকাশে মেঘের কালো ছায়া, রোজার সাধনায় ধ্যানে, মন উড়ে বেড়ায় জান্নাতের মাঝে।”
রমজান নিয়ে বানি
প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমজান মাস সম্পর্কে বলেছেন, আরবি বছরের সকল মাসের সরদার রমজান মাস। রমজান মাসে যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাকের নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করে মহান আল্লাহ পাক তাকে ক্ষমা করে দেন। এছাড়াও রমজান মাস ঘিরে অনেক বিখ্যাত মানুষ এর বিভিন্ন বাণী রয়েছে যা নিচে দেওয়া হল।
- রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন: “যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে এবং সওয়াবের উদ্দেশ্যে রমজান মাসের রোজা রাখে, তার পূর্ববর্তী সকল গুনাাহ মাফ করে দেওয়া হয়।” (বুখারী ও মুসলিম)
- রমজান মাস এসেছে, ভালো কাজের সুযোগ নিয়ে, পাপ থেকে দূরে থাকি, আল্লাহ্র রহমত লাভ করি।
- রোজা রাখি, নামাজ পড়ি, দান-খয়রাত করি, আল্লাহ্ আমাদের গোনাহ মাফ করুন, জান্নাতে বাস করার নিয়ামত দান করুন।
- রমজান মাসের ফজিলত অনেক, আল্লাহ্র রহমতের বারিধারা ঝরে, এই সুযোগে আমরা সকলে, আল্লাহ্র কাছে ক্ষমা চাই।
রোজা নিয়ে উক্তি
একজন রোজাদার ব্যক্তির মুখের গন্ধ মহান আল্লাহ পাকের নিকট অধিক পছন্দের। এছাড়াও মহান আল্লাহ পাক আরো বলেন, যে ব্যক্তি রোজা রাখবে আমি নিজ হাতে তার প্রতিদান দিব। এ থেকে বোঝা যায় রোজা একজন মুসলিমের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ।
- সূরা আল-ক্বদর, আয়াত ১: “নিশ্চয়ই আমি ক্বদর রাতে কুরআন নাজিল করেছি।”
- ইমাম আল-গাজালী (রহঃ) বলেছেন: “রমজান মাস হলো আধ্যাত্মিক উন্নয়নের মাস। এই মাসে মুসলমানদের উচিত তাদের আত্মাকে পবিত্র করার চেষ্টা করা।”
- রমজান মাস এলো, মনের আকাশে আনন্দের জোয়ার, রোজা, নামাজ, তেলাওয়াতে, মন উতলা হলো ভাবনার।
- রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন: “জান্নাতের একটি দরজা রয়েছে যাকে ‘রায়্যান’ বলা হয়। রমজান মাসে রোজা রাখা ব্যক্তিদের দিয়ে সেই দরজা দিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে।” (বুখারী ও মুসলিম)
- রোজার দিন দীর্ঘ যদিও, ধৈর্য ধরে মুসলিম, পানি-আহার ত্যাগ করে, করে আল্লাহ্র ইবাদত নিষ্ঠায়।
মাহে রমজান নিয়ে বানি
হিজরী আরবি সনের বারটি মাসের মধ্যে রমজান মাস কে সর্বশ্রেষ্ঠ মাস বলা হয়ে থাকে। বিভিন্ন হাদিস ও পবিত্র আল কুরআনুল কারীমের বিভিন্ন আয়াত দ্বারা বছরের অন্যান্য মাস থেকে রমজান মাসের শ্রেষ্ঠত্বের প্রমাণ পাওয়া যায়। তাই এই রমজান মাস নিয়ে অনেক বাণী সমাজে প্রচলিত রয়েছে।
- মুহাম্মাদ ইকবাল (রহঃ) বলেছেন: “রমজান মাস হলো মুসলমানদের ঐক্য ও সংহতির মাস। এই মাসে আমাদের সকলের উচিত ঐক্যবদ্ধভাবে আল্লাহর ইবাদত করা।”
- রমজান মাস, একটি আধ্যাত্মিক মাস, আত্মার পবিত্রতা লাভের মাস, এবং আল্লাহ্র কাছে নৈকট্য লাভের মাস।
- আল-মাহমুদ: “রমজান মাস, রহমতের মাস, বরকতের মাস, এই মাসে আল্লাহ্ তায়ালা করেন বান্দার গোনাহ মাফ।”
- আসুন আমরা সকলে, এই রমজান মাসকে কাজে লাগাই, আত্মার পবিত্রতা লাভের জন্য, এবং আল্লাহ্র কাছে নৈকট্য লাভের জন্য।
রমজান সম্পর্কে সুন্দর উক্তি
আসমানে চাঁদ দেখা দিলে পবিত্র রমজানের আগমন সুনিশ্চিত হয় এবং এর প্রথম দিন থেকে রোজা পালন শুরু হয়ে থাকে। আমাদের মধ্যে অনেকেই সরাসরি নিজে চাঁদ দেখে রমজানের আগমন সুনিশ্চিত করতে পছন্দ বোধ করে। আর রমজানের আগমন সুনিশ্চিত হলেই সকালে চারদিকে সেহরি খাওয়ার এক আনন্দঘন পরিবেশ তৈরি হয়।
- রমজান মাস, রহমতের মাস, বরকতের মাস, এই মাসে আল্লাহ্ তায়ালা করেন বান্দার গোনাহ মাফ।
- তারাবির নামাজে, মসজিদে সমবেত হয় মুসলিম, আল্লাহ্র কাছে ক্ষমা চায়, করে দোয়া-দরুদ।
- লাইলাতুল কদরের রাতে, আল্লাহ্র রহমত বর্ষিত হয়, মুসলিমরা আল্লাহ্র ইবাদতে মগ্ন থাকে, করে ক্ষমা চায়।
- রমজান মাস শেখায়, সংযম, ধৈর্য, এবং সহানুভূতি, আল্লাহ্র প্রতি ভালোবাসা, এবং মানবতার সেবা।
শেষ কথা
কিছুদিন পর রমজান মাসের আগমন ঘটবে বিদায় আমার আমাদের মধ্যে অনেকেই রমজান নিয়ে উক্তি সহ বিভিন্ন অনলাইনে খুঁজছে। পবিত্র রমজান মাস নিজেকে পবিত্র করার মাস।তাই আরবি বছরের এই পবিত্র মাসে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনকে সন্তুষ্ট করার জন্য অধিক পরিমাণে আল কুরআন ও হাদিসে উল্লেখিত আমল ও আল্লাহপাকের ইবাদত বন্দেগী করতে হবে।
আরও দেখুনঃ
রোজা নিয়ে স্ট্যাটাস, ক্যাপশন ও ফেসবুক পোস্ট