মুসলমানদের প্রধান দুইটি ধর্মীয় উৎসব ছাড়াও বেশ কয়েকটি দিবস রয়েছে। তার মধ্যে শবে বরাত আমাদের কাছে অতি পরিচিত একটি দিবস। বহু আগে থেকেই বাংলাদেশ সহ বর্হিবিশ্বে বিভিন্ন দেশে জাঁকজমক পূর্ণভাবে শবে বরাত পালন করা হয়।
শবে বরাতের রাতে আমরা ছেলেরা মসজিদে চলে গেলেও বাড়ির মেয়েরা কোথাও যেতে পারে না। তাই তারা শবে বরাতের নামাজ কিভাবে পড়তে হয় তা জানতে চায়। নিচে মহিলাদের শবে বরাতের নামাজ পড়ার নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।
মহিলাদের শবে বরাতের নামাজ পড়ার নিয়ম
শবে বরাত উপলক্ষে কোন নির্দিষ্ট ফজিলত পূর্ণ নামাজ নেই। তবে আপনি চাইলে সাধারণ নফল নামাজ পড়তে পারেন। এই নফল নামাজের ক্ষেত্রে মহিলাদের জন্য রুকু সেজদা ব্যতীত আলাদা কোন নিয়ম নেই। আপনারা পূর্বের ন্যায় নামাজ আদায় করবেন।
শবে বরাতের সাধারণ নফল নামাজ পড়ার জন্য প্রথমে নিয়ত করতে হবে। এরপর সূরা ফাতিহা এর সাথে অন্য যে কোন সূরা মিলিয়ে পড়তে হবে। এবং অতঃপর রুকু সেজদা ও শেষ বৈঠকে তাশাহুদ দরুদ দোয়া মাসুরা পাঠ করে সালাম ফেরানোর মাধ্যমে নামাজ শেষ করতে হবে।
মহিলাদের শবে বরাতের নামাজ কত রাকাত
হিজরী শাবান মাসের ১৪ ও ১৫ তারিখের মধ্যবর্তী রাতে শবে বরাত পালন করা হয়ে থাকে। বলা হয়ে থাকে এই রাতে মহান আল্লাহ পাক হিংসুক এবং শিরিককারী ব্যথিত সকলকে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেন। তাই বিভিন্ন স্থানের অনেক মুসলমানরা নফল ইবাদাতের মাধ্যমে শবে বরাত পালন করেন।
তবে অনেক মা-বোনেরা জানতে চায় শবে বরাতের নামাজ কত রাকাত। যেহেতু শবে বরাতের নির্দিষ্ট নামাজ না থাকায় সাধারণ নফল নামাজ পড়তে হবে। তাই আপনি চাইলে দুই রাকাত করে যত ইচ্ছা তত রাকাত নামাজ পড়তে পারবেন।
মহিলাদের শবে বরাতের নামাজের নিয়ত
পুরুষ এবং মহিলা উভয়ের জন্যই নামাজের নিয়ত একই। তাই নামাজের নিয়ত নিয়ে চিন্তা করার কোনো কারণ নেই। তবে আপনাদের সুবিধার্থে নিচে নফল নামাজের নিয়ত দেওয়া হলো।
দুই রাকাত নফল নামাজের আরবি নিয়তঃ
নাওয়াইতুয়ান উসাল্লিয়া-লিল্লাহি তা’আলা রাকাআতি ছালাতিল নফলি মোতাওয়াজ্জিয়ান ইলা জিহাতিল কা বাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।
এছাড়াও আপনি চাইলে এভাবে বাংলাতেও নিয়ত করতে পারেন। আমি কিবলামুখী হয়ে আল্লাহর উদ্দেশ্যে দুই রাকাত নফল নামাজ আদায়ের নিয়ত করতেছি আল্লাহু আকবার।
মহিলাদের শবে বরাতের নামাজ কখন পড়তে হবে
শবে বরাতের করণীয় সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যখন তোমাদের কাছে শাবানের রাত (শবে বরাত) হাজির হবে, তখন তোমরা সেই রাতটি জাগ্রত থাকো (নামাজ পড়ো, কোরআন তেলাওয়াত করো, তাসবিহ পড়ো, জিকির করো, দোয়া করো) এবং দিনের বেলা রোজা রাখো। (ইবনে মাজাহ : ১৩৮৪, বায়হাকি : ৩৮২৩)
উপরের হাদিসটিতে দেখা যায় প্রিয় নবী সাবানের রাতে জাগ্রত থেকে আল্লাহর ইবাদত করতে বলেছেন। তাই আপনারা চাইলে এশার ফরজ নামাজের পর এবং বিতরের আগে কিছু নফল ইবাদত করতে পারেন। এছাড়াও কুরআন তেলাওয়াত করা যেতে পারে।
মহিলাদের শবে বরাতের নামাজের সতর্কতা
কুরআনে বর্ণিত হয়নি এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম করতে বলেননি এমন কিছু করলে বেদাত বলে গণ্য হবে। যেহেতু শবে বরাতের নামাজের বিশেষ ফজিলতের কথা প্রিয় নবী সাঃ বলেননি সেহেতু অধিক ফজিলত পাওয়ার উদ্দেশ্যে শবে বরাতের নামাজ পড়া যাবে না।
এছাড়াও নফল ইবাদতকে অতিরিক্ত ইবাদত হিসেবে ধরা হয়। অধিক রাত জেগে শবে বরাতের নফল ইবাদত করতে গিয়ে ভোর রাতের ফজরের সালাত যেন ঘুমের কারণে নষ্ট না হয়। তাই আমাদের শবে বরাতের রাতে নফল ইবাদত বন্দেগি করার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
শেষ কথা
যে সকল মা-বোনেরা মহিলাদের শবে বরাতের নামাজ পড়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে চেয়েছিলেন আশা করি তা জানতে পেরেছে। এছাড়াও শবে বরাতের রাতে হালুয়া রুটি খেলে সব পাওয়া যাবে এমন বেদাত আমাদের সমাজে প্রচলিত রয়েছে। যা থেকে আমাদের বিরত থাকতে হবে।
আরও দেখুনঃ
শবে বরাতের নামাজের নিয়ত আরবি ও বাংলা
শবে বরাতের নামাজের নিয়ম, কয় রাকাত ও কিভাবে পড়তে হয়