গ্রীস ইউরোপীয় একটি রাষ্ট্র। যা ইউরোপ মহাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব পাশে ও বলকান উপদ্বীপের দক্ষিণ প্রান্তে অবস্থিত। গ্রিসের বর্তমান অর্থনীতি অনেক শক্তিশালী ও উন্নত। ইউরোপীয় ইউরো ইনকামের স্বপ্ন আমাদের মধ্যে অনেকেরই রয়েছে।
ইউরোপ মহাদেশের উন্নতশীল রাষ্ট্র গ্রিসে বৈধ ভাবে প্রবেশ করা বেশ কঠিন। বৈধভাবে প্রবেশ করতে সর্বপ্রথম ভিসার জন্য আবেদন করতে হয়। অন্যান্য দেশের তুলনায় ইউরোপের রাষ্ট্রের ভিসার চাহিদা বেশি থাকায় গ্রীস ভিসা পাওয়া তুলনামূলক কঠিন হয়ে থাকে।
তবে সরকারি ভাবে সহজে গ্রিস ভিসা পাওয়া সম্ভব। গ্রিসে আপনার পরিচিত কোন লোক থাকলে তার মাধ্যমেও সহজে ভিসা পাওয়া সম্ভব। তবে বিভিন্ন দালাল ও এজেন্সির দ্বারা ভিসা পাওয়া কঠিন হলেও তারা মিথ্যা ধোকায় ফেলে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। নিচে গ্রিসের বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
গ্রিস যেতে কত টাকা লাগে
বর্তমানে সম্পূর্ণভাবে গ্রিসের ভিসা প্রস্তুত কার্যক্রম চালু রয়েছে।বেসরকারি ভাবে বিভিন্ন দালাল ও এজেন্সির দ্বারা ভিসা তৈরি করে গ্রিসে কাজের উদ্দেশ্যে গেলে কাজ পাওয়ার অনিশ্চয়তা থেকে যায়। সেখানে সরকারি ভাবে গ্রিসে যেতে পারলে কাজ পাওয়ার নিশ্চয়তা থাকে দ্বিগুণ।
বর্তমানে গ্রিসে সরকারিভাবে বিভিন্ন কাজে লোক নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। সরকারি ভাবে এ সকল কাজে গ্রিস যেতে খরচ তুলনামূলক কম হয়। সরকারি ভাবে গ্রিস যেতে আনুমানিক ৬ লাখ টাকা থেকে শুরু করে ৭ লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ হয়ে থাকে।
অন্যদিকে বেসরকারিভাবে গ্রীস যাওয়ার খরচ প্রায় দ্বিগুণ হলেও কাজ নিয়ে পড়তে হয় নানা সংশয়ে। বেসরকারি ভাবে গ্রিস যেতে খরচ হয় আনুমানিক ৮ থেকে ৯ লাখ টাকার উপরে। তবে ভিসা তৈরি করতে পরিচিত কারো সাহায্য নিলে ভিসা তৈরির খরচ কিছুটা কমতে পারে।
গ্রীস ভিসা খরচ ২০২৫
বৈধভাবে কোন দেশে প্রবেশ করতে হলে সেই দেশের ভিসা থাকা অত্যন্ত জরুরী। ভিসা আবেদন ফি প্রদানের মাধ্যমে ভিসার জন্য আবেদন করতে হয়। সরকারি ভাবে ভিসা পেয়ে গেলে এই আবেদনের সাথে অল্প কিছু টাকা বিনিয়োগ করলে গ্রিসে পৌঁছানো যায়। সরকারি ভাবে ৫ লাখ টাকা থেকে ৬ লাখ টাকা খরচ করলে গ্রীস ভিসা পাওয়া সম্ভব।
বেসরকারিভাবে বিভিন্ন দালাল বা এজেন্সির মাধ্যমে গ্রীস ভিসার আবেদন করলে ভিসা পাওয়ার সম্ভাবনা তুলনামূলক কম থাকে। কেননা গ্রিসের লোক নিয়োগ প্রক্রিয়া বেসরকারি ভাবে কম সম্পন্ন হয়। বেজরকারিভাবে ভিসা তৈরি করতে হলে আনুমানিক ৭ লাখ টাকা থেকে মিনিমাম ৮ লাখ টাকার মত খরচ করতে হবে।
গ্রিস ওয়ার্ক পারমিট ভিসা কত টাকা লাগে
ওয়ার্ক পারমিট ভিসা বলতে মূলত কাজের ভিসা কে বোঝানো হয়ে থাকে। ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় গ্রিসে সব থেকে বেশি টাকা ইনকাম করা যায়। যার কারণে সবার মধ্যেই ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় গ্রীস যাওয়ার আগ্রহ বেশি। বর্তমানে ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় গ্রীস যেতে আনুমানিক সর্বনিম্ন ৫ লাখ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৭ লাখ টাকা পর্যন্ত লাগতে পারে।
গ্রিস কৃষি ভিসা ২০২৫
গ্রীস উন্নত দেশ হলেও এখানে প্রচুর পরিমাণে কৃষি কাজের সুযোগ রয়েছে। গ্রিসের অনেক স্থায়ী বাসিন্দা শখের বসে নিজে ফসল উৎপাদন করে খেতে চায়। এই ফসল দেখা শোনা করার জন্য তারা প্রায়ই শ্রমিক নিয়োগ করে থাকে। গ্রীস কৃষি ভিসা তৈরি করতে সর্বনিম্ন আনুমানিক ৪ লাখ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৬ লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ করতে হতে পারে।
বাংলাদেশ থেকে গ্রিস যেতে কত টাকা লাগে
বাংলাদেশ ও ভারতের অনেক বাঙালি বর্তমানে গ্রীসে বসবাস করছে। অনেকেই আবার নতুন করে গ্রীস যাওয়ার আগ্রহ দেখাচ্ছে। বাংলাদেশ থেকে গ্রীস যেতে কত টাকা খরচ করতে হবে তা অনেকটাই আপনি কোন ভিসায় যেতে চাচ্ছেন সেই ভিসার উপর নির্ভর করে। বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে গ্রিস যেতে আনুমানিক সর্বনিম্ন ৮ থেকে ৯ লাখ টাকার আশেপাশে খরচ করতে হচ্ছে।
গ্রীস ভিসা আবেদন ২০২৫
বর্তমানে গ্রিসের অনেক মালিকাধীন কোম্পানি ভিসার সার্কুলার প্রকাশ করছে। এই সকল সার্কুলার অনুযায়ী ভিসার জন্য আবেদন করলে ভিসা পাওয়া সহজ হয়ে যায়। অন্যথায় দালাল বা এজেন্সি দ্বারা ভিসা পাওয়ার পরিবর্তে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া আপনি চাইলে অনলাইনের মাধ্যমে সহজেই গ্রীস ভিসার আবেদন সম্পন্ন করতে পারেন।
গ্রীস কাজের বেতন কত
বর্তমানে গ্রিসে যে সকল মানুষ যাওয়ার আগ্রহ দেখাচ্ছে তাদের বেশিরভাগই অর্থ উপার্জন করার জন্য যেতে চাচ্ছে। গ্রিসে বেতন কত হবে তা কত সময় কাজ করানো হবে তার উপর নির্ভর করে। গ্রিসে একজন শ্রমিকের মাসিক সর্বনিম্ন বেতন আনুমানিক ৯০০ ইউরো থেকে ১১০০ ইউরো হয়ে থাকে। অর্থাৎ বাংলাদেশি টাকায় ১ লাখ ৮ হাজার টাকা থেকে ১ লাখ ৩২ হাজার টাকার আশেপাশে।
আবার একই কাজে দক্ষ হলে এই বেতন গিয়ে দাঁড়ায় ১০০০ ইউরো থেকে ১২৭৭ ইউরোতে। যখন বাংলাদেশি টাকাতে একজন দক্ষ শ্রমিকের মাসিক বেতন হয় ১ লাখ ২০ হাজার টাকা থেকে ১ লাখ ৪৪ হাজার টাকা অর্থাৎ প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা। হবে দক্ষ না হয়ে গ্রীস যাওয়ার চিন্তা না করাই শ্রেয়।
শেষ কথা
বৈধ ভাবে গ্রিস যাওয়ার ইচ্ছা থাকলেও অনেকেই সহজেই তা পূরণ করতে পারে না। বাংলাদেশের অনেক অসাধু দালাল বা এজেন্সি অবৈধ ভাবে গ্রিসে পৌঁছে দেওয়ার অঙ্গীকার করে। অতঃপর মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়ে সকলকে বিপদের মুখে ফেলে দেয়। তাই এসব দালাল থেকে সদা সতর্ক থাকতে হবে।