কাঠমান্ডুর পাহাড়ি সৌন্দর্য, পোখারার শান্ত লেক, বা বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর আধ্যাত্মিক টান—নেপাল যাত্রা বাঙালির জন্য স্বপ্নের মতো। ঢাকা থেকে নেপালের ফ্লাইট মানেই একটা সাশ্রয়ী, দ্রুত এবং রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা, যেখানে হিমালয়ের কোলে পৌঁছে যাওয়া যায় মাত্র ১.৫ থেকে ২ ঘণ্টায়। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, নেপাল এয়ারলাইন্স, বা বাজেট ক্যারিয়ার যেমন ইন্ডিগো—প্রত্যেকে এই রুটে প্রতিযোগিতামূলক দামে টিকেট দিচ্ছে। ২০২৫ সালে, নেপালের ট্রাভেল ডিমান্ড বাড়ছে, বিশেষ করে বাংলাদেশি পর্যটকদের জন্য যারা কাছাকাছি ছুটি কাটাতে চান।
আরও জানতে পারেনঃ সৌদি এয়ারলাইন্স ঢাকা টু দাম্মাম টিকেট প্রাইস
ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর (DAC) থেকে কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর (KTM) পর্যন্ত দূরত্ব মাত্র ৬৬০ কিলোমিটার। সরাসরি ফ্লাইটে সময় লাগে ১ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট। তবে, কানেকটিং ফ্লাইট (দিল্লি বা কলকাতা হয়ে) বেছে নিলে সময় ৪-৬ ঘণ্টা। অক্টোবর ২০২৫-এর জন্য, টিকেটের দাম সিজনের উপর নির্ভর করে। অফ-পিক সময়ে, যেমন নভেম্বর বা ফেব্রুয়ারি, দাম ১৫-২০% কম। পিক সিজনে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) দাম বাড়ে, কিন্তু প্রমোশনাল অফার ধরলে সাশ্রয় হয়।
ঢাকা টু নেপাল বিমান ভাড়া এখন শুরু হচ্ছে ১৮,৫০০ টাকা (USD ১৫৫) থেকে ওয়ান-ওয়ে ইকোনমি ক্লাসে, আর রাউন্ড ট্রিপে ৩৫,০০০ টাকা (USD ২৯২) থেকে। বিজনেস ক্লাসে দাম দ্বিগুণ হতে পারে। এই গাইডে আমরা দাম, ফ্লাইট অপশন, বুকিং টিপস এবং নেপাল ভ্রমণের সুবিধা তুলে ধরব, যাতে আপনার যাত্রা হয় সাশ্রয়ী ও স্মরণীয়।
ফ্লাইট শিডিউল এবং এয়ারলাইন্স অপশন
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স: সপ্তাহে ৪টি সরাসরি ফ্লাইট (মঙ্গল, বৃহস্পতি, শনি, রোববার)। উদাহরণস্বরূপ, অক্টোবর ২০, ২০২৫-এ সকাল ১০:৩০-এ ঢাকা থেকে উড়ে দুপুর ১২:১৫-এ কাঠমান্ডু পৌঁছায়। দাম: ওয়ান-ওয়ে ১৮,৫০০-২২,০০০ টাকা। রাউন্ড ট্রিপ ৩৫,০০০-৪৫,০০০ টাকা।
নেপাল এয়ারলাইন্স: সপ্তাহে ৩টি সরাসরি ফ্লাইট। দাম প্রায় একই, তবে বুকিং ৩০ দিন আগে করলে ১৫% ডিসকাউন্ট।
ইন্ডিগো ও এয়ার ইন্ডিয়া: কানেকটিং ফ্লাইট কলকাতা বা দিল্লি দিয়ে। ওয়ান-ওয়ে ২০,০০০ টাকা থেকে, তবে কানেকশনের জন্য অপেক্ষা সময় ২-৪ ঘণ্টা।
নেপালের টুরিজম বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ থেকে বছরে ৫০,০০০+ ভিজিটর আসে, তাই ফ্লাইট ফ্রিকোয়েন্সি বাড়ছে। সরাসরি ফ্লাইট বেছে নিন সময় বাঁচাতে।
আরও জানতে পারেনঃ বাংলাদেশ থেকে দুবাই যেতে কত সময় লাগে
ঢাকা টু নেপাল বিমান ভাড়া: দামের বিস্তারিত
২০২৫ সালের অক্টোবরের জন্য ঢাকা টু নেপাল বিমান ভাড়া নিম্নরূপ:
ইকোনমি ক্লাস:
ওয়ান-ওয়ে: ১৮,৫০০-২৫,০০০ টাকা (USD ১৫৫-২০৮)। সস্তা ডিল অফ-পিকে, যেমন নভেম্বরে।
রাউন্ড ট্রিপ: ৩৫,০০০-৫০,০০০ টাকা (USD ২৯২-৪১৭)। বিমানের প্রমো অফারে ৩৩,০০০ টাকায় পাওয়া যায়।
বিজনেস ক্লাস:
ওয়ান-ওয়ে: ৪৫,০০০-৬০,০০০ টাকা (USD ৩৭৫-৫০০)।
রাউন্ড ট্রিপ: ৮৫,০০০-১,২০,০০০ টাকা (USD ৭০৮-১,০০০)। এতে লাউঞ্জ অ্যাক্সেস, প্রায়োরিটি বোর্ডিং।
দাম ওঠানামা করে ফ্লাইটের সময় এবং বুকিং টাইমিং-এর উপর। উদাহরণস্বরূপ, Google Flights-এ দেখা যায় ২৫ অক্টোবরের রাউন্ড ট্রিপ ৩৬৪ USD (৪৩,৬৮০ টাকা)। পিক সিজনে (ডিসেম্বর) দাম ৫০% বাড়তে পারে।
ব্যাগেজ এবং অনবোর্ড সুবিধা
ইকোনমি: ২০-২৩ কেজি চেকড ব্যাগেজ + ৭ কেজি হ্যান্ড ব্যাগ। অতিরিক্ত ব্যাগে ৪,০০০-৮,০০০ টাকা চার্জ।
বিজনেস: ৩০ কেজি চেকড + ১০ কেজি হ্যান্ড। ফ্রি মিল সার্ভিস, হালাল/ভেজ অপশন।
ইনফ্লাইট: বিমান এবং নেপাল এয়ারলাইন্সে বিনামূল্যে খাবার, ওয়াই-ফাই (বিজনেসে)।
কোভিড প্রটোকল হিসেবে, নেপালে ভ্যাকসিন সার্টিফিকেট বা RT-PCR টেস্ট লাগতে পারে। এয়ারপোর্টে হেলথ চেক মিনিমাল।
কীভাবে সস্তায় টিকেট বুক করবেন
টিকেট বুকিং সহজ, তবে কৌশল জানলে সাশ্রয় হবে:
অনলাইন প্ল্যাটফর্ম: বিমানের সাইট (biman-airlines.com), নেপাল এয়ারলাইন্স (nepalairlines.com.np), বা Wego.com, Google Flights-এ দাম তুলনা করুন।
অফ-পিক বুকিং: নভেম্বর-ফেব্রুয়ারি সস্তা। ৪৫-৬০ দিন আগে বুক করলে ১০-২০% কম।
প্রমো কোড: বিমানের “FLY25” বা ইন্ডিগোর সিজনাল অফার চেক করুন।
পেমেন্ট: বিকাশ, নগদ, বা ক্রেডিট কার্ড। ঢাকার গুলশানে বিমান অফিসে ক্যাশ পেমেন্ট।
ফ্লেক্সি টিকেট: ক্যানসেল ফি কম, রিফান্ডযোগ্য অপশন নিন।
Reddit-এ ট্রাভেলাররা বলে, “Google Flights-এ প্রাইস ট্র্যাকার সেট করুন, দাম কমলেই নোটিফিকেশন পাবেন।” এছাড়া, গ্রুপ বুকিংয়ে ৫-১০% ছাড় পাওয়া যায়।
নেপাল ভ্রমণের সেরা সময় এবং টিপস
নেপালে অক্টোবর-নভেম্বর সেরা—পরিষ্কার আকাশ, হিমালয়ের দৃশ্য। পোখারার ফেওয়া লেকে বোটিং বা এভারেস্ট বেস ক্যাম্প ট্রেকিং-এর জন্য এই সময় আদর্শ। ভিসা? বাংলাদেশিদের জন্য অন-অ্যারাইভাল ভিসা (১৫ দিনে USD ৩০)।
ট্রাভেল টিপস:
কাঠমান্ডুতে ট্যাক্সি নিন (USD ৫-১০)।
হোটেল বুকিংয়ে Agoda বা Booking.com ব্যবহার করুন।
স্থানীয় খাবার (মোমো, দাল-ভাত) চেষ্টা করুন, বাজেট-ফ্রেন্ডলি।
অন্যান্য এয়ারলাইন্সের তুলনা
ইন্ডিগো: সস্তা (১৬,০০০ টাকা ওয়ান-ওয়ে), কিন্তু কানেকশন লাগে। এমিরেটস: দাম বেশি (৬০,০০০+ টাকা), তবে লাক্সারি। বিমানের সরাসরি ফ্লাইট সবচেয়ে সুবিধাজনক।
শেষ কথা: আপনার নেপাল যাত্রা শুরু করুন
ঢাকা টু নেপাল বিমান ভাড়া এখনই চেক করে বুক করুন Biman Bangladesh বা Google Flights-এ। হিমালয়ের কাছাকাছি এই যাত্রা শুধু ভ্রমণ নয়, বরং আত্মার জন্য এক উৎসব। আজই প্ল্যান করুন—নেপালের দরজা খোলা আছে!


